সর্বশেষ


বাংলাদেশ

পর্ব-১

ঢাকা দক্ষিণ সিটির পূর্বাঞ্চল অবহেলা, অনিয়ম ও দুর্ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হচ্ছে

আমিনুল ইসলাম
আমিনুল ইসলাম

শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫ ১২:৪১ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬১ থেকে ৭০ নং ওয়ার্ড বসবাসরত মানুষের জীবনযাত্রা স্থিমিত হয়ে পড়েছে।রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, জরাজীর্ণ ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা,বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়া,,পয় নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকার কারণে এখানকার প্রায় ৪ লাখ মানুষকে নিয়মিত ভোগান্তি পোহাতেই হচ্ছে।স্থানীয়দের মনে আশঙ্কা আর আশঙ্কা। তাদের প্রশ্ন এ ভোগান্তির শেষ কবে হবে বা কে করবে?

উল্লেখ্য রাজধানী ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ।যা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৫ নং ওয়ার্ডে পড়েছে। সুদুর নারায়ণগঞ্জ থেকে শুরু করে এই অঞ্চলের মেধাবী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের আস্থার জায়গা শামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ। এছাড়া ডঃ মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, রোকেয়া আহসান কলেজ, মান্নান স্কুল এন্ড কলেজ, জামিয়াতুল আবরার মাদ্রাসা,মাতুয়াইল মহিলা মাদ্রাসা,সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এছাড়া আরো ৫০ টির মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই এলাকায়। বিভিন্ন প্রিন্টিং প্রেস সহ নানামুখী ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো এই অঞ্চলটি সব সময়ই অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিতই রয়ে গেছে।রায়েরবাগ, গ্যাস রোড,আদর্শবাদ, কদমতলা চৌরাস্তা, বাদশা মিয়া রোড,মাতুয়াইল নিউ টাউন, ফার্মের মোড়, কোনাপাড়া, স্ট্যাফ কোয়ার্টার সহ আশপাশের এলাকায় বছরের পর বছর ধরে চলছে অপরিকল্পিত নগরায়ন। বহুতল ভবন, শপিং সেন্টার কোন প্রকার নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই শুধুমাত্র রাজউক এর অনুমোদন নিয়ে গড়ে উঠছে বিভিন্ন আবাসন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের বহুতল ভবন।তবে রাজউক এর দেয়া শর্ত অধিকাংশরাই পালন করছেন না।৬৫ নং ওয়ার্ড এর অধীন মাতুয়াইল মেডিকেল থেকে পুরান মসজিদ, দোতলা মসজিদ, বাইতুল আমান জামে মসজিদ এর আশপাশে প্রতিনিয়তই মাথা গুঁজে উঠছে বহুতল ভবন। যেখানে আবাধে কোন প্রকার কনস্ট্রাকশন বিধিমালা অনুসরণ না করেই চলছে হরদম মানুষের জীবন নিয়ে কেনা বেচার খেলা।এখানকার অনেকেই স্থানীয় জমির মালিক হওয়ায় এদের উপরে কেউ কথাও বলে না যার সুযোগ নিচ্ছে বিভিন্ন আবাসন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান।মাতুয়াইল মেডিকেল থেকে আবুল হোসেন রোড হয়ে সামনে আসতে রয়েছে ইউনাইটেড টাওয়ার যার পাশে একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, যেখানে নেই অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা।এরকম অসংখ্য ভবন যেখানে বসবাসের ঝুঁকি রয়েছে তবুও কিভাবে এরা নির্ঘুম রাত কাটায় এ নিয়ে শংকা প্রকাশ করেন স্থানীয় সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ। তাদের কথা তারা অসহায় এ নিয়ে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নির্মাণ সামগ্রী মূল রাস্তার উপরে রাখায় জনগণকে পরতে হয় ভোগান্তির মুখে।এছাড়া বহুতল ভবন নির্মাণ কোড অনুযায়ী শ্রমিকদের পোশাক, হেলমেট, নির্মাণাধীন ভবনের চারপাশে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে যে সকল ব্যবস্থা নেয়া দরকার তার কোন কিছু না নিয়েই তারা বহুতল ভবনের উপরে ঢালাইয়ের কাজ সহ অন্যান্য কাজ করে যাচ্ছে।এখানে রয়েছে ২০ টির মতো বেসরকারি ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোম তাদের ভবন গুলো পরিদর্শনকালে দেখা যায় অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাপনা সহ কোন প্রকার সিকিউরিটি ব্যবস্থায় নেই তাদের।সামনে ড্রেনের ময়লা আবর্জনা থেকে জন্ম নেওয়া মশার কামড়ে প্রতিনিয়ত এই এলাকার মানুষ ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশা বাহিত ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েই থাকে।এখানকার প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ ধোয়া,ধুলোবালির কারনে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। ভারসাম্যহীন পরিবেশ এর মরন গ্রাসে এখানকার বসবাসকৃত মানুষ।

হাসপাতাল ও নার্সিংহোম মালিকদের সচেতনতার অভাব রয়েছে বলে দাবি করেন এখানকার কোনাপাড়ার একটি ক্লিনিকে শিশু কন্যাকে চিকিৎসা দিতেন আসা রফিকুল ইসলাম দম্পতি।বেসরকারি এই ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন তারা কেন কথা বলবে! এটাতো তাদেরই লাভ! যত বেশি মানুষ অসুস্থ হবে ততোই তাদের ব্যবসা প্রসারিত হবে। তার কথা থেকে ক্ষোভ হতাশা আর এখানকার স্থানীয় চিকিৎসা ব্যবসায়ীদের অমানবিক মানসিকতার প্রকাশ ঘটে।পরিবহন যানজট ময়লা, আবর্জনার ভাগাড়, জলাবদ্ধতা বিভিন্ন আবাসন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান থেকে আসা বর্জ্য, পাইলিং এর জন্য খনন করে রাখা জায়গায় পানি জমে সেখান থেকে মশার সৃষ্টি , ক্লিনিক নার্সিংহোম এর বর্জ্য, সিটি কর্পোরেশনের সঠিক সময়ে বর্জ্য অপসারণ না করা, জনগুরুত্বপূর্ন রাস্তার উপরে বর্জ স্থাপন কেন্দ্র করা,প্রিন্টিং প্রেসের বিভিন্ন প্রকার ডাস্ট যত্র তত্র ফেলা সহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এই এলাকা।সম্প্রতি এখানকার স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় একটি বহুতল ভবন হেলে পরে।এতে আশপাশের ভবনগুলো ঝুঁকির মুখে।ঝুঁকির মুখে এখানকার ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।

দ্রুত একটি সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নগরায়ন নিশ্চিত না করা গেলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান স্থানীয় সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী সহ সাধারণ মানুষ।

১৪৫ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন