সর্বশেষ


সম্পাদকীয়

রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাব: গণতন্ত্র বিকাশের অন্তরায়

আল হেলাল
আল হেলাল

শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫ ৩:৩৭ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
গণতন্ত্র এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে জনগণ সরাসরি বা প্রতিনিধির মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, অনেক দেশে এই গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও রাজনৈতিকভাবে অস্থির দেশগুলোতে সেনাবাহিনীর সরাসরি কিংবা পরোক্ষ ভূমিকা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করে, যা গণতন্ত্রের বিকাশে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।

সেনাবাহিনীর প্রধান কাজ হলো রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষা এবং বহিরাগত হুমকি মোকাবিলা করা। কিন্তু যখন তারা নিজেদের সীমা অতিক্রম করে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে হস্তক্ষেপ করে, তখনই সমস্যার সূত্রপাত ঘটে। নির্বাচিত সরকারের নীতি ও কর্মকাণ্ডে অপ্রত্যক্ষভাবে প্রভাব খাটানো, প্রশাসনে নিজের পছন্দের লোক বসানো, কিংবা গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করার মতো কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে যে, এমন পরিস্থিতিতে প্রকৃত গণতন্ত্রের কোনো জায়গা থাকে না।

যেসব দেশে সেনাবাহিনী বারবার রাজনীতিতে নাক গলিয়েছে, সেসব দেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সেখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দুর্বল হয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে, এবং জনগণের আস্থা নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর থেকে উঠে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ নাগরিক রাজনৈতিকভাবে নিরুৎসাহিত হয়, যা গণতন্ত্রকে আরও দুর্বল করে তোলে।

অন্যদিকে, রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর অনুপস্থিতি এবং একটি শক্তিশালী, জবাবদিহিমূলক বেসামরিক সরকারই পারে গণতন্ত্রকে বিকশিত করতে। এর জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সচেতনতা, শক্তিশালী সাংবিধানিক কাঠামো এবং সেনাবাহিনীর সুনির্দিষ্ট ভূমিকা নির্ধারণ।

অতএব, গণতন্ত্রের বিকাশে বাধা দূর করতে হলে রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করতে হবে এবং বেসামরিক কর্তৃত্বের ভিত্তি সুদৃঢ় করতে হবে। গণতন্ত্রের প্রকৃত সৌন্দর্য তখনই প্রকাশ পাবে, যখন সকল প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ সীমার মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালন করবে এবং জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।

১৮১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সম্পাদকীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন