জলাতঙ্ক — যার কোন চিকিৎসা নেই।
শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫ ৮:১৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
জলাতঙ্ক (Rabies) একটি মারাত্মক ভাইরাসজনিত রোগ, যা মূলত আক্রান্ত প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে মানুষের দেহে ছড়িয়ে পড়ে।
এই রোগটি বিশ্বব্যাপী একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হয়, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।
রোগের কারণ: জলাতঙ্ক রোগের মূল কারণ হলো Rabies virus, যা Lyssavirus গোত্রের অন্তর্গত। এই ভাইরাসটি মূলত স্তন্যপায়ী প্রাণীদের দেহে বাস করে এবং তাদের লালা বা দেহরসের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়।
সংক্রমণের উপায়:
১) কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, বাদুড় ইত্যাদি আক্রান্ত প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে।
২) আক্রান্ত প্রাণীর লালা যদি চোখ, মুখ বা কাটা জায়গায় প্রবেশ করে।
৩) মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ খুবই বিরল।
রোগের লক্ষণ: জলাতঙ্কের লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়, সাধারণত সংক্রমণের ১-৩ মাস পরে। সাধারণ লক্ষণগুলো হল:
১) মাথাব্যথা ও জ্বর
২) কামড়ের স্থানে ব্যথা ও খিচুনি
৩) অতিরিক্ত উত্তেজনা, বিভ্রান্তি
৪) আলো ও পানির প্রতি ভয় (Hydrophobia)
৫) পেশির খিঁচুনি, পক্ষাঘাত
৬) চূড়ান্ত অবস্থায় মৃত্যু
প্রতিরোধ ও প্রতিকার:
আক্রান্ত প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষত স্থানটি সাবান ও পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।
পোস্ট এক্সপোজার ভ্যাকসিন (PEP) গ্রহণ করতে হবে।
কুকুর ও অন্যান্য পোষা প্রাণীকে নিয়মিত জলাতঙ্ক টিকা দিতে হবে।
জলাতঙ্ক একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ হলেও সচেতনতার অভাবে এটি মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং যেকোনো প্রাণীর কামড়কে হালকাভাবে না দেখে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। সরকার ও জনসাধারণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
১৪৬ বার পড়া হয়েছে