স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব: রক্তে কেনা অধিকার, রক্ষায় চাই সচেতনতা
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫ ৪:৩১ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গর্বের অধ্যায় হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। লাখো শহীদের রক্তে কেনা এই স্বাধীনতা আমাদের দিয়েছে একটি স্বতন্ত্র পরিচয়, দিয়েছে কথা বলার অধিকার, দিয়েছে স্বপ্ন দেখার সাহস। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের পথ যেমন রক্তমাখা ছিল, তেমনি এই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ধরে রাখার পথও কণ্টকাকীর্ণ।
স্বাধীনতা মানে শুধু একটি পতাকা নয়, একটি জাতীয় সংগীত নয়, বরং একটি জাতির নিজস্ব পথচলা। সার্বভৌমত্ব মানে হলো, জাতি তার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সব সিদ্ধান্তে নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। কোনো বিদেশি শক্তি কিংবা প্রভাব সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, যুদ্ধ নেই বটে, কিন্তু এক অদৃশ্য চাপে রাষ্ট্রগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে—কখনও অর্থনৈতিক শর্ত, কখনও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব, কখনও কৌশলগত জোটের চাপ।
বাংলাদেশ এই বাস্তবতার বাইরে নয়। উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথ ধরে হাঁটতে গিয়ে অনেক সময় নানা আন্তর্জাতিক চুক্তি, ঋণ বা কূটনৈতিক সম্পর্ক আমাদের স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে বারবার।
আমরা কি যথেষ্টভাবে আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারছি? প্রশ্নটি সহজ, উত্তরটা জটিল। দেশের ভেতরে যখন গণতন্ত্র প্রশ্নবিদ্ধ হয়, দুর্নীতি যখন রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে খেয়ে ফেলে, তখন শুধু বাইরের হুমকি নয় ভেতরের দুর্বলতাও আমাদের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে।
আজ, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে, আমাদের মনে রাখতে হবে—স্বাধীনতা একদিনের অর্জন নয়, তেমনি সার্বভৌমত্ব রক্ষা প্রতিদিনের দায়িত্ব। এ দায়িত্ব রাষ্ট্রের, রাজনীতিবিদের, প্রশাসনের, সংবাদমাধ্যমের, এবং সর্বোপরি জনগণের।
স্বাধীনতা রক্ষার জন্য যেমন জীবন দিতে হয়েছিল, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রয়োজন ঐক্য, সচেতনতা ও সততা। আর এটাই হবে শহীদদের প্রতি আমাদের প্রকৃত শ্রদ্ধা।
১৫৪ বার পড়া হয়েছে