পিরোজপুর বড় মসজিদের প্রাচীন ভবনের ইতিহাস
রবিবার, ১১ মে, ২০২৫ ৬:৫৮ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
পিরোজপুর শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বড় মসজিদ শুধু জেলার ধর্মপ্রাণ মানুষদের প্রাণকেন্দ্রই নয়, এটি এই অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ইসলামি সংস্কৃতির এক জীবন্ত সাক্ষ্য। প্রায় ১৫০ বছর আগে, ব্রিটিশ শাসনামলে, জৈনপুর (ভারতের উত্তর প্রদেশ) থেকে আগত হাফেজ মো. সোলায়মান এই পবিত্র স্থাপনাটির সূচনা করেন। প্রথমদিকে এটি ছিল একটি সরল কাঠ ও গোলপাতায় তৈরি ছাউনিযুক্ত কাঠামো, যা স্থানীয় মুসলমানদের নামাজ আদায়ের একমাত্র জায়গা ছিল।
কালক্রমে স্থানীয় মুসলমানদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে এবং স্থাপনার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হলে, ১৮৯৫ সালের দিকে মসজিদটি পাকা ভবনে রূপান্তর করা হয়। এটি ছিল সে সময়ের একটি দৃষ্টিনন্দন নির্মাণ, যা মাটির গায়ে ইট-চুনকাম দিয়ে তৈরি করা হয়। হাফেজ সোলায়মান প্রায় ৪০ বছর ধরে নিজ হাতে ইমামতি ও মসজিদের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। পরে বয়সজনিত কারণে তিনি তার ছোট ছেলে হাফেজ মো. নোমানকে ভারতের জৈনপুর থেকে এনে দায়িত্ব অর্পণ করেন, যিনি মসজিদ পরিচালনায় নতুন গতি আনেন।
বর্তমানে মসজিদটি আধুনিকায়নের ছোঁয়ায় পাঁচতলা বিশিষ্ট এক সুবিশাল স্থাপনায় রূপ নিয়েছে। তবে পুরাতন ভবনের একটি অংশ এখনো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, যা এখনকার প্রজন্মকে স্মরণ করিয়ে দেয় ইসলামের প্রতি এই অঞ্চলের মানুষের গভীর ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের কথা।
এই মসজিদ শুধু ধর্মীয় আচরণ পালনের জায়গা নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যা শত বছরের ঐতিহ্য বুকে ধরে রেখে আজও মুসলিম সমাজের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে টিকে আছে।
৪৮১ বার পড়া হয়েছে